আরিফুর রহমান স্বপন, কুমিল্লা প্রতিনিধি:
ঘনিয়ে আসছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। যতই ঘনিয়ে আসছে নির্বাচন ততই প্রচারণায় ব্যস্ততা বাড়ছে প্রার্থীদের। শেষ মুহুর্তের প্রচার প্রচারণা ও গণসংযোগে প্রতিশ্রুতির ফুলঝড়িতে ভোটারদের কাছে টানার চেষ্টা করছেন প্রার্থীরা।
কুমিল্লা-৯ (লাকসাম-মনোহরগঞ্জ) আসনে এবার ৭ জন প্রার্থী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন। এরা হলেন- বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী স্থানীয় সরকার মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম, জাতীয় প্রার্টির প্রার্থী প্রফেসর ড. গোলাম মোস্তফা, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ প্রার্থী মীর মো. আবু বকর ছিদ্দিক, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ প্রার্থী মনিরুল আনোয়ার, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ প্রার্থী জমির উদ্দিন ভূঁইয়া, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট প্রার্থী মোয়াজ্জেম হোসেন ও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন-বিএনএম প্রার্থী হাসান মিয়া।
নির্বাচনী প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে এ আসনের দুই উপজেলার ১৯টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভার সকল এলাকায় নিয়মিত গণসংযোগ, উঠান বৈঠক ও পথসভার মাধ্যমে সাধারণ ভোটারদের কাছে ভোট প্রার্থনা করছেন নির্বাচনে অংশ নেয়া প্রার্থীরা। তবে নির্বাচনী মাঠে নৌকার প্রার্থী স্থানীয় সরকার মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম, লাঙ্গলের প্রার্থী প্রফেসর ড. গোলাম মোস্তফা, চেয়ার প্রতীকের প্রার্থী মীর মো. আবু বকর ছিদ্দিক এ তিন জনই এখন পুরো এলাকা চষে বেড়াচ্ছেন।
এছাড়াও গামছা প্রতীকের প্রার্থী জমির উদ্দিন ভূঁইয়াকে মাঝে মধ্যে প্রচারণায় দেখা গেলেও মোমবাতি, মশাল ও নোঙর প্রতীকের কোন প্রার্থীকে নির্বাচনী মাঠে গণসংযোগ ও প্রচার প্রচারণায় দেখা যায়নি।
এদিকে, নৌকার প্রার্থী স্থানীয় সরকার মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম ২ জানুয়ারি (মঙ্গলবার) লাকসাম পৌর এলাকায় বিভিন্ন উঠান বৈঠক ও পথসভার মধ্য দিয়ে তার ব্যক্তিগত নির্বাচনী প্রচার প্রচারণা ও গণসংযোগ শেষ করলেও দলীয় নেতাকর্মীরা তার পক্ষে প্রচার প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে শেষ মুহুর্তের প্রচারণায় লাঙ্গলের প্রার্থী প্রফেসর ড. গোলাম মোস্তফা, চেয়ার প্রতীকের প্রার্থী মীর মো. আবু বকর ছিদ্দিক ও গামছা প্রতীকের প্রার্থী জমির উদ্দিন ভূঁইয়া ভোটারদের মন জয়ে প্রচার প্রচারণা ও গণসংযোগে এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন।
গণসংযোগে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী এবং স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেন, আমি জনগণের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছি এবং আজীবন করে যাবো। এ আসন থেকে আপনারা আমাকে চারবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত করেছেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাকে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী করেছেন। ফলশ্রুতিতে লাকসাম ও মনোহরগঞ্জ উপজেলায় ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে।
নৌকা মার্কায় ভোট চেয়ে তিনি বলেন, নৌকা মার্কা মানে দেশের মানুষের উন্নয়নের মার্কা, নৌকা মার্কায় ভোট দিলে দেশের মানুষ শান্তিতে থাকে এবং দেশে ব্যাপক উন্নয়ন হয়।
জাতীয় পার্টি মনোনীত লাঙ্গলের প্রার্থী প্রফেসর ড. গোলাম মোস্তফা বলেন, দলের সিদ্ধান্তে আমি প্রত্যেকবারেই জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে আসছি। এ বারের নির্বাচনী মাঠ একটু ব্যতিক্রম মনে হচ্ছে। তিনি অভিযোগ করে বলেন, বিভিন্ন এলাকায় আমার লাঙ্গলের পোষ্টার খুলে ফেলা হচ্ছে। সুষ্ঠু নির্বাচন হলে জয়ের ব্যপারে আশাবাদী তিনি।
ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ মনোনীত চেয়ার প্রতীকের প্রার্থী মীর মো. আবু বকর ছিদ্দিক বলেন, কুরআন সুন্নাহর আলোকে স্বাধীনতার স্বপক্ষে সমাজ ও রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে নির্বাচনে চেয়ার প্রতীক নিয়ে প্রার্থী হয়েছি। জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে আমার পাশে রয়েছেন। অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে এবং ভোটাররা নির্বিঘ্নে ভোট কেন্দ্র যেতে পারলে ইনশাআল্লাহ আমার বিজয় নিশ্চিত। তবে এ আসনে কোন প্রার্থীর কর্মী সমর্থকদের মধ্যে এখন পর্যন্ত কোনো ধরনের সহিংসতা ও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি এবং অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা নেই এ আসনে। গণসংযোগ ও প্রচার প্রচারণায় এগিয়ে থাকায় শেষ পর্যন্ত কুমিল্লা-৯ (লাকসাম-মনোহরগঞ্জ) এ আসনে নৌকা, চেয়ার ও লাঙ্গল মার্কার মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে বলে জানান সাধারণ ভোটাররা।