স্টাফ রিপোর্টার:
নরসিংদীর রায়পুরায় ককটেল ফাঁটাতে বাধা দেওয়ায় বাড়িতে ঢুকে মো. জুলহাস মিয়া (২৮) নামের এক যুবককে গুলি করে হত্যার ২৪ ঘন্টা পার হলেও এখনো থানায় কোন মামলা হয়নি।
রবিবার (২৩ এপ্রিল) দুপুরে উপজেলার নিলক্ষ্যায় গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত জুলহাস মিয়ার ময়না তদন্ত শেষে মরদেহ হস্তান্তর করা হলে বাদ আসর জানাজা শেষে তার দাফন সম্পন্ন করা হয়। তবে পুলিশের পক্ষ থেকে জানাজা শেষে মামলা করা হবে বলে নিহতের স্বজনদের পক্ষ থেকে জানানো হয়।
নিহত জুলহাস মিয়া (২৮) রায়পুরার নিলক্ষ্যা ইউনিয়নের বীরগাঁও পূর্বপাড়া গ্রামের শামসুল মিয়ার ছেলে। তিনি মুরগির খামারি ছিলেন।
অপরদিকে, ঘটনার সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হওয়া অপর চারজনের মধ্যে দু’জন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। তাদের শরীর থেকে এখনো গুলি বের করা সম্ভব হয়নি বলে জানা গেছে।
রবিবার বিকেলে সরেজমিনে নিলক্ষ্যা ইউনিয়নেরে চংপাড়া গ্রাম ঘুরে স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, শনিবার বিকেল সাড়ে ৫ টার দিকে উপজেলার চরাঞ্চল নিলক্ষ্যা ইউনিয়নের দড়িগাঁও গ্রামের ইউসুফ মিয়ার ছেলে এনামুল, বাঁশগাড়ি ইউনিয়নের বাবুল মিয়ার ছেলে (দড়িগাঁও গ্রামের বর্তমানে নরসিংদী শহরের বাসাইল এলাকায় বসবাসকারী টেটা সর্দার বকুলের ভাগিনা) সুমনসহ কয়েকজন যুবক ইউনিয়নের বীরগাঁও পূর্বপাড়া গ্রামের চংপাড়া বাজারের পাশে একটি মুরগির ফার্মের সামনে ককটেল ফাঁটানোর সময় স্থানীয় যুবক নিহত জুলহাস মিয়াসহ অন্যান্যরা বাধা প্রদান করে। এতে দু’পক্ষের মধ্যে বাকবিতান্ডা চলে। পরে এক পর্যায়ে এনামুল ও সুমনসহ দড়িগাঁও গ্রামের অন্যান্য যুবকেরা উত্তেজিত হয়ে চলে যায়। কিছুক্ষণের মধ্যে তারা বিভিন্ন অস্ত্রসস্ত্রে সজ্জিত হয়ে পূণরায় ফিরে আসে এবং নিহত জুলহাস মিয়াসহ অন্যান্যদের বাড়ীতে ঢুকে এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়তে থাকে। এসময় জুলহাস মিয়াসহ অপর ৪ জন গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হলে তাদের মধ্যে তিনজনকে উদ্ধার করে নরসিংদী ১০০ শয্যা বিশিষ্ট জেলা হাসপাতালে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক জুলহাস মিয়াকে মৃত ঘোষনা করে এবং অপর দু’জন হাবীব ও ইয়ামিনকে উন্নত চিকিৎসার্থে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করে। আহত অপর রাইজুদ্দিন ও সাদ্দাম মিয়া কে অন্য একটি হাসপতালে চিকিৎসা নেয় বলে জানা গেছে।
রবিবার দুপুরে নরসিংদী সদর হাসপাতাল মর্গে নিহত জুলহাস মিয়ার ময়না তদন্ত শেষে মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হলে এলাকায় নিয়ে আসা হয়। পরে বিকেল সাড়ে ৫টায় বাদ আসর চংপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন মাঠে জানাজা শেষে আতঁশ আলী বাজার কবর স্থানে দাফন করা হয়।
এদিকে নিহত জুলহাস হত্যার ২৪ ঘন্টা গত হলেও থানায় কোন মামলা হয়নি। জানাজা শেষে মামলা করা হবে বলে স্বজন ও পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়।
নিহত জুলহাস মিয়ার দূর সম্পর্কের চাচাতো ভাই এবং আহত হাবীবের চাচা তাজুল ইসলাম বলেন, গতকালে সন্ধ্যার ঠিক পূর্ব মূহুর্তে সুমন ও এনামুলের নেতৃত্বে একদল যুবক অস্ত্রসস্ত্রসহ আমাদের বাড়ীতে ঢুকে এলোপাতাড়ি গুলিছুড়তে থাকে। এতে জুলহাস ও ভাতিজা হাবীব গুলিবিদ্ধ হয় পরে তাদেরকে হাসপাতাল নেওয়া পথেই জুলহাসের মৃত্যু হয়। আমরা মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছি।
রায়পুরা থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) গোবিন্দ সরকার মামলা না হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, নিলক্ষার ঘটনায় পরিবারের পক্ষ থেকে এখনো কোন অভিযোগ আসেনি। তবে জানতে পেরেছি জানাজা শেষে মামলা করা হবে।