আজ বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত হচ্ছে ঈদুল ফিতর। সারাদেশের ঈদগাঁও ও মসজিদে মসজিদে অনুষ্টিত হয় ঈদুল ফিতরের জামাত। জামাতে ইমাম ও মুসল্লিরা যুদ্ধবিধ্বস্ত ফিলিস্তিনের নিপীড়িত মানুষদের জন্য আল্লাহর দরবারে সাহায্য কামনা করেন। তাদের জন্য প্রতিটি জামাতের মোনাজাত করা হয়। এছাড়াও দেশ ও জনগণ এবং মুসলিম উম্মাহর কল্যাণর ও শান্তি কামনা করা হয়।
বৃহস্পতিবার (১১ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৮টায় অনুষ্ঠিত সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণস্থ জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে ঈদুল ফিতরের প্রধান জামাতের মোনাজাতে এ দোয়া করেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খতিব হাফেজ মাওলানা মুফতি মোহাম্মদ রুহুল আমিন ইমাম। মসজিদের মুয়াজ্জিন মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান ক্বারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
নামাজ শেষে মোনাজাতে বাংলাদেশকে শান্তির দেশ করে দেওয়ার দোয়া করা হয়। বঙ্গবন্ধু, প্রধানমন্ত্রীর জন্য দোয়া করা হয়। ডেঙ্গুসহ দূরারোগ্য ব্যাধি থেকে সবাইকে হেফাজত করার দোয়া করা হয়। বিশেষ করে, ফিলিস্তিনিদের জন্য আল্লাহর কাছে সাহায্য কামনা করা হয়।
নামাজের আগে আমবয়ানে মুফতি মোহাম্মদ রুহুল আমিন ইমাম দেশকে এগিয়ে নিতে প্রধানমন্ত্রীর হাত শক্ত করার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে স্বপ্ন নিয়ে দেশ স্বাধীন করেছিলেন, সেই সফলতা অর্জনের সাক্ষেপে সবাইকে সচেষ্ট থাকতে হবে। দেশ গঠনে সন্তানদের সুক্ষিশিত করার আহ্বান জানান তিনি। সন্তানদের প্রতি দায়িত্ব সুন্দরভাবে পালন করতে হবে।
জাতীয় ের মাঠের পাশে ছিল। জামাতের সময় বিদ্যুৎ সরবারহ নিরবচ্ছিন্ন করতে রাখা হয় জেনারেটর।জাতীয় ঈদগাহ মাঠে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন, প্রধান বিচারপতি, মন্ত্রী, এমপি, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোররেশন মমেয়র, সচিব, বিদেশি কূটনীতিকসহ রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ও সর্বস্তরের মুসল্লি ঈদ জামাতে অংশ নেন। নারীদের জন্য মাঠের দক্ষিণ প্রান্তে পর্দার আড়ালে নামাজের ব্যবস্থা ছিল। যেখানে প্রবেশে পৃথক ফটকের ব্যবস্থাও রাখা হয়। এখানে প্রায় ৩৫ হাজার নারী-পুরুষ একসঙ্গে ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায় করেন। এদিকে প্রতিবছরের মত এবারও ঈদের দিন পাঁচটি জামাত হয় বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে। ঈদগাহ প্রাঙ্গণে ছিল অজুর ব্যবস্থা, স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্র, পুলিশ, র্যাবের কনট্রোল রুম। ফায়ার সার্ভিসের একটি দলও জাতীয় ঈদগাহের মাঠের পাশে ছিল। জামাতের সময় বিদ্যুৎ সরবারহ নিরবচ্ছিন্ন করতে রাখা হয় জেনারেটর।
এদিকে, এক বাণীতে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ঈদুল ফিতরের শিক্ষা সকলের মাঝে ছড়িয়ে পড়ুক, গড়ে উঠুক সমৃদ্ধ বাংলাদেশ-এ প্রত্যাশা করে বলেন, ‘ইসলাম শান্তি ও কল্যাণের ধর্ম। এখানে হিংসা-বিদ্বেষ, হানাহানি, কূপমন্ডূকতার কোনো স্থান নেই। মানবিক মূল্যবোধ, সাম্য ও পারস্পরিক সহাবস্থান এবং পরমতসহিষ্ণুতাসহ বিশ্বজনীন কল্যাণকে ইসলাম ধারণ করে। ইসলামের এই সুমহান বার্তা ও আদর্শ সবার মাঝে ছড়িয়ে দিতে হবে। মানবতার মুক্তির দিশারি হিসেবে ইসলামের মর্মার্থ ও শাশ্বত বাণী ছড়িয়ে পড়ুক সর্বত্র, বিশ্ব ভরে উঠুক শান্তি আর সৌহার্দ্যে-পবিত্র ঈদুল ফিতরে, বাণীতে রাষ্ট্রপতি এমন প্রত্যাশা করেন।’
অন্যদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঈদ উপলক্ষে এক ভিডিও বার্তায় দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়ে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করার আহ্বান জানান।
বার্তায় তিনি বলেন, ‘প্রিয় দেশবাসী, আসসালামু আলাইকুম। একমাস সিয়াম সাধনার পর আবার আমাদের মধ্যে পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর এসেছে। ঈদ মানে আনন্দ। আসুন আমরা আত্মীয়-স্বজন, প্রতিবেশীসহ সবার সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করি। ঈদুল ফিতর আমাদের সবার জীবনে বয়ে আনুক সীমাহীন আনন্দ, সুখ ও শান্তি। আপনারা সবাই ভাল থাকুন, সুস্থ থাকুন ও নিরাপদে থাকুন। ঈদ মোবারক।’
ঈদুল ফিতর উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন বঙ্গভবনে এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবনে সব শ্রেণিপেশার মানুষের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন।