আরিফুর রহমান স্বপন, কুমিল্লা প্রতিনিধি
কুমিল্লার নাঙ্গলকোট উপজেলার হাসানপুর রেলওয়ে স্টেশনে একটি মালবাহী ট্রেনের সঙ্গে বিরতিহীন ৭৮৭ নং আন্তঃনগর সোনার বাংলা এক্সপ্রেস ট্রেনের সংঘর্ষের ঘটনায় ট্রেনের লোকোমোটিভ মাষ্টার ঢাকা সেডের এলএম (চালক) জসিম উদ্দিনসহ অন্তত ৪০ জন যাত্রী আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় চট্রগ্রাম-ঢাকা, লাকসাম, সিলেট ও চাঁদপুর রুটে ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে।
ওই ট্রেন দূর্ঘটনায় বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের (ইসি) ১২ কর্মকর্তা আহত হয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। চট্টগ্রাম-৮ এর উপ-নির্বাচন উপলক্ষ্যে প্রশিক্ষণ দেয়া শেষে ঢাকায় ফিরছিলেন তারা। আহত কর্মকর্তারা হলেন, ইসির সিনিয়র সহকারী সচিব রৌশন আরা বেগম, সিনিয়র সহকারী সচিব মোহাম্মাদ নাজিম উদ্দিন, সহকারী সচিব মোহাম্মদ আশফাকুর রহমান, আইসিটির সিস্টেম অ্যানালিস্ট মামুনুর হোসেন, নির্বাচন কমিশনার বেগম রাশেদা সুলতানার পিএস হাবিবা আক্তার, নির্বাচনী প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম ও আবুল কাশেম মোহাম্মদ মাজহারুল ইসলাম, সহকারী প্রোগ্রামার শুধাংশু কুমার সরকার, এনআইডি উইংয়ের ফারজানা লিজা, রাঙ্গামাটি জেলার এক উপজেলা নির্বাচন অফিসার আমিনুল ইসলাম এবং বাকিরা আইসিটি অনুবিভাগের।
রেলওয়ে সূত্রে জানা যায়, রোববার (১৬ এপ্রিল) সন্ধ্যা পৌনে সাতটার দিকে চট্টগ্রাম-ঢাকা-লাকসাম রেলসড়কের নাঙ্গলকোট উপজেলার হাসানপুর স্টেশনে দাঁড়িয়ে থাকা একটি মালবাহী কন্ট্রেইনার ট্রেনের সঙ্গে চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী বিরতিহীন অন্তঃনগর সোনার বাংলা এক্সপ্রেস ট্রেনের সংঘর্ষে ইঞ্জিনসহ ছয়টি বগি লাইনচ্যুত হয়। এতে চালকসহ অন্তত ৪০ জন যাত্রী আহত হয়েছেন। আহতদের নাঙ্গলকোট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং বিভিন্ন ক্লিনিকে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
লাকসাম রেলওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জসিম উদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, সন্ধ্যার দিকে হাসানপুর স্টেশনে দাঁড়িয়ে থাকা একটি মালবাহী ট্রেনটির সঙ্গে ঢাকাগামী ৭৮৭ নং আন্তঃনগর সোনার বাংলা এক্সপ্রেস ট্রেনের সংঘর্ষ হয়। দূর্ঘটনার পর থেকে ওই রুটে ট্রেন চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ রয়েছে এবং উদ্ধার অভিযান অব্যাহত রয়েছে। লাইনচ্যুত বগিগুলো উদ্ধার করে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক করতে কয়েক ঘণ্টা সময় লাগতে পারে।
এদিকে, দূর্ঘটনার খবর পেয়ে নাঙ্গলকোট উপজেলা চেয়ারম্যান সামছুদ্দিন কালু, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রায়হান মেহবুব, এএসপি সার্কেল জাহিদুল ইসলাম ঘটনাস্থলে অবস্থান করছেন।
উপজেলা চেয়ারম্যান সামছুদ্দিন কালু জানান, ভয়াবহ ওই দুর্ঘটনায় ৪০ জনেরও বেশী আহত হয়েছে। তবে এখনো পর্যন্ত নিহতের কোন খবর পাওয়া যায়নি। ঘটনাস্থলে ইতিমধ্যে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা পৌঁছে উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রায়হান মেহবুব জানান, উপজেলা প্রশাসন, নাঙ্গলকোট থানা পুলিশ, লাকসাম রেলওয়ে পুলিশ, ফায়ার সার্ভিসের সদস্য এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা উদ্ধার কাজে সহযোগিতা করছেন। উদ্ধার অভিযানের পর এই মুহূর্তে ট্রেনের ভেতর আহত ও নিহত কোন যাত্রী নেই বলেও জানান তিনি।
এছাড়াও দুর্ঘটনায় যারা গুরুতর আহত হয়েছেন তাদেরকে সরকারিভাবে চিকিৎসা খরচ দেয়ার আশ্বস দেন তিনি।