আবু সাইদ, গাজীপুর প্রতিনিধিঃ
গত ছয়দিন ধরে থেমে থেমে বৃষ্টি পড়ায় ঈদের ছুটিতে দর্শকের ভাটা পড়েছে গাজীপুরের শ্রীপুরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে। ঈদের ছুটিতে যেখানে দর্শনার্থীর সংখ্যা বাড়ার কথা ছিলো, সেখানে দর্শনার্থী সংখ্যা কমেছে ৩/৪ গুন। যার ফলে আয়ে ভাটা পড়েছে পার্ক কেন্দ্রিক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের মাঝে। অন্য ঈদে হাজার হাজার দর্শনার্থীদের পদচারণায় মুখোর থাকতো পুরো পার্ক প্রাঙ্গন।
শনিবার (১জুলাই) দুপুরে পার্ক ঘুরে দেখা গেছে দর্শনার্থীদের তেমন চাপ নেই। দায়ীত্ব প্রাপ্তরা অনেকটাই আয়েশী সময় কাটাচ্ছে। টানা বৃষ্টির কারণেই পার্কে দর্শনার্থীর সংখ্যা আশংকাজন কমে গেছে এমনটাই দাবী সংশ্লিষ্টদের।
সূত্র মতে, গত ঈদুল ফিতরের সময় পার্ক পরিদর্শনে এসেছিলো দৈনিক ১০/১৫ হাজার দর্শক। এবার ঈদে উল্টোচিত্র। ঈদের দিন পার্কে এসেছিলো ৬৯৮ জন দর্শনার্থী। ঈদের দ্বিতীয় দিন শুক্রবার (৩০জুন) দর্শনার্থী এসেছিলো ৩ হাজর ৮২৫ জন। ঈদের তৃতীয় দিন শনিবার (১জুলাই) দুপুর পর্যন্ত দশনার্থী এসেছে হাজারের কম। বিকেল পর্যন্ত হয়তো ২/৩ হাজারে দাড়াতে পারে।
স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, বছর জুড়েই সাফারি পার্কে ব্যপক দর্শক সমাগম থাকে। অন্য সময় ইদোত্তর দিন গুলোতে ১০/১৫ হাজার দর্শক সমাগম হয়ে থাকে। এবার ঈদে উল্টোচিত্র। দিনে ২/৪ হাজার দর্শক ও আসে না।
শনিবার (১জুলাই) দুপুরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে গিয়ে দেখা গেছে যেন অনেকটাই দর্শক শূন্য। যেখানে পার্কিং এলাকায় দাড়িয়ে থাকতো শতশত গাড়ি। হাজারো দর্শকের পদচারণায় মুখোর থাকতো পুরো পার্ক প্রাঙ্গন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে রাখতে হিমশিম খেত দায়ীত্ব প্রাপ্তরা। নিরাপত্তা কর্মীরা থকতো তৎপর। গত ঈদুল ফিতরের দ্বিতীয়,তৃতীয় দিনে পার্কে ধারণ ক্ষমতার চার পাঁচ গুন দর্শকের পদচারণা ছিলো। ঈদুল আযহায় পার্কে উল্টো চিত্র। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কের অন্যতম আকর্ষণ কোর সাফারিতে বিশেষে বাসে চড়ে উন্মোক্ত রয়েল বেঙ্গল টাইগার, সিংহ, ভল্লুক, হরিণ, গয়াল, ওয়াইডবিষ্ট, জিরাফ, জেব্রা, নীল গাই সহ দূর্লভ প্রাণী পরিদর্শন। বিভিন্ন উৎসবে কোর সাফারিতে হাজার হাজার দশনার্থী দীর্ঘ লাইনে দাড়িয়ে কোর সাফারি ভ্রমন করতো।
শনিবার দেখা গেছে কোর সাফারিতে দর্শনার্থীর দীর্ঘ লাইন নেই। অল্প কয়েকজন দাড়িয়ে আছে বাসের অপেক্ষায়। পাখি শালাতে থাকতো শিশু কিশোরদের উপচে পরা ভীর দেখা যায়নি।
অটোরিক্সা চালক মো. কবির বলেন, ঈদুল ফিতরের সময় দৈনিক আড়াই-তিন হাজার টাকা উপার্জন হতো। এ ঈদে ৫/৭’শ টাকাও হয়না।
বাদাম বিক্রেতা বৃদ্ধা হালিমা খাতুন বলেন, অন্য সময় পার্কে অনেক লোক আসে। এ ঈদে লোক খুব কম। আমদের বেচা বিক্রি নেই বললেই চলে।
ঘোড়ার গাড়ি চালক আলম হোসেন বলেন, বিভিন্ন উৎসবে পার্কে প্রচুর দর্শক আসে। এবার খুব কম। দিনভর অপেক্ষা করে খরচের টাকা উঠে না।
পার্ক এলাকার ব্যবসায়ীরা বলেন, ঈদোত্তর বেচাকেনার জন্য অনেক পন্য মজুত করেছিলেন। বাহারি পণ্যে ভরপুর থাকলেও নেই ক্রেতা।
স্থানীয় ব্যক্তি আলাউদ্দীন জানান, পার্কে দর্শক এতোকম আসছে যা কখনো কল্পনা করিনি। দুইটা ঈদে পার্কের ব্যবসায়ীরা ভালো মুনাফা অর্জন করে থাকে। এ ঈদে ব্যবসা একেবারেই মন্দা।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সহকারী বন সংরক্ষক মোঃ রফিকুল ইসলাম বলেন, দর্শনার্থীদের জন্য পার্ক প্রস্তুত আছে। টানা বৃষ্টির কারণে অনেকটা বেঘাত ঘটেছে । অন্য ঈদের তুলনায় এবার ঈদে দর্শনার্থীর সংখ্যা ৩/৪ গুন কম। তবে বৃষ্টি কমলে দর্শক সংখ্যা বাড়তে পারে বলে তিনি আশা করেন।