এস,এম ইসাহক আলী রাজু, নাটোর জেলা প্রতিনিধিঃ
উত্তরাঞ্চলের বর্ষীয়ান ও কিংবদন্তী রাজনীতিবিদ নাটোর-৪ (গুরুদাসপুর-বড়াইগ্রাম) আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব অধ্যাপক আব্দুল কুদ্দুস এমপি আর নেই।
বুধবার (৩০ আগস্ট) সকাল ৭টা ২০ মিনিটে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিশেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন আব্দুল কুদ্দুস এমপি। (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহি রাজিউন)। মৃত্যু কালে তার বয়স হয়েছিলো ৮২ বছর। তিনি স্ত্রী, এক মেয়ে ও এক ছেলেসহ অসংখ্য শুভাকাঙ্ক্ষী রেখে গেছেন। তার মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করেছেন আব্দুল কুদ্দুস এমপি ব্যক্তিগত সহকারী মুহাম্মদ ইব্রাহিম।
শ্বাসকষ্টজনিত কারণে আলহাজ্ব আব্দুল কুদ্দুসকে গত শনিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে অক্সিজেনের মাত্রা কমতে থাকায় আইসিউতে নেওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হলে তাকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়। আজ বুধবার সকালে লাইফ সাপোর্ট খুলে দিয়ে তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়। উন্নত চিকিৎসার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে তাকে থাইল্যান্ডে নেওয়ার কথা থাকলেও অক্সিজেনের মাত্রা কম থাকায় নেওয়া সম্ভব হয়নি।
আলহাজ্ব অধ্যাপক আব্দুল কুদ্দুস এমপির ১ম জানাযার নামাজ আজ বুধবার বাদ যোহর ন্যাম ভবন মসজিদে অনুষ্ঠিত হয়। আগামীকাল বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় বড়াইগ্রাম পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে, দুপুর ১২টায় গুরুদাসপুর সরকারি মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে এবং বাদ যোহর বিলশা নিজ বাড়ির পাশে বিলশা ঈদগাহ মাঠে জানাযা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে মা বাবার পাশেই আব্দুল কুদ্দুসের মরদেহ দাফন করা হবে।
পরিবার ও স্থানীয় নেতাকর্মীদের সূত্রে জানা যায়, আলহাজ্ব আব্দুল কুদ্দুস দীর্ঘদিন ধরেই শ্বাষকষ্টজনিত রোগে ভুগছিলেন। তিনি নিয়মিত থাইল্যান্ডে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। আব্দুল কুদ্দুস ১৯৪৬ সালের ৩০ অক্টোবর জন্মগ্রহণ করেন চলনবিল অধ্যুষিত গুরুদাসপুর উপজেলার খুবজিপুর ইউনিয়নের বিলসা গ্রামে। তার পিতা ছিলেন মো: হায়েতুল্লাহ সরদার পেশায় একজন কৃষক ও মাতা মোছা: গুলেনুর বেগম। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ তাকে নাটোর-৪ আসনে টানা সাতবার দলীয় মনোনয়ন দিয়েছিলেন। নাটোর-৪ আসন থেকে পঞ্চম, সপ্তম, নবম, দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে পাঁচবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। সপ্তম সংসদে তিনি মৎস্য ও পশু সম্পদ প্রতিমন্ত্রীর দ্বায়িত্ব পালন করেন।
এছাড়া তিনি বর্তমানে দ্বিতীয় বারের মতো নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। আব্দুল কুদ্দুস রাজশাহী কলেজের নির্বাচিত ভিপি ছিলেন এবং বৃহত্তর রাজশাহী জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছেন। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হওয়ার পূর্বে রাজশাহীতে তিনিই প্রথম পাকিস্তানের পতাকায় অগ্নিসংযোগ করেন। পরবর্তীতে ভারতে ট্রেনিং নিয়ে মুজিব বাহিনীর আঞ্চলিক কমান্ডার ও সংগঠকের ভূমিকা পালন করেন।
গুরুদাসপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ধারাবারিষা ইউপি চেয়ারম্যান মো. আব্দুল মতিন মাষ্টার জানান, প্রিয় নেতার মৃত্যুতে তারা বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন। তিনি শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন।