খালিদ হাসান রিংকু, কুষ্টিয়া:
বর্ষা মৌসুমে দৌলতপুর উপজেলার চর অঞ্চলের নদীর দুই কূল পানিতে ভরে যাবে। নদী পারাপারে নৌকায় হবে একমাত্র ভরসা। বর্ষা মৌসুমকে সামনে রেখে ফিলিপনগর আবেদের ঘাট পারে নৌকা মেরামত করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন নৌকার মাঝিরা।
আবেদের ঘাট ও জিরোপয়েন্ট নদীর দুই পার মিলিয়ে প্রতিদিন ৪ থেকে ৫ হাজার যাত্রী পরাপার হয়ে থাকে। ফিলিপনগর ইউনিয়নের ইসলামপুর গ্রামের বুলেট আলী জানান, আমার বেশ কয়েকটি গরু এবং ১৪টি ছাগল আছে। প্রতিনিয়ত আমার নৌকায় চরে যেতে হয় ঘাস আনতে। পুরনো হয়ে যাওয়া নৌকা তাই বন্যা আসার আগেই মেরামত করে নেওয়া হচ্ছে।
চিলমারী চরের নৌকার মাঝি হয়রত আলী জানান, চিলমারীর পদ্মা নদীতে ধীরে ধীরে পানি বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছে। বর্ষা মৌসুম এলে নদীতে বন্যা দেখা দেয়। আর সে সময় নৌকার চাহিদা দ্বিগুণ হয়। প্রতিবছর শতাধিক নৌকা মেরামত হয়, আবার শতাধিক নৌকা নতুন করে তৈরি করা হয়। নতুন নৌকা দিয়ে বেশিরভাগ সময় শুধু যাত্রী পারাপার করা হয়ে থাকে।
নৌকার কারিগরদের সাথে কথা বলে জানা যায়, একসময় ডিঙি নৌকা বেশি ব্যবহার হতো। এখন মানুষের প্রয়োজনে বড় বড় নৌকা তৈরি হচ্ছে। এখন আর নাম থাকে না নৌকার। নৌকা তৈরিতে বিশেষ কোনো কাঠ ব্যবহার হয় না। তবে সাধারণত নৌকার ক্ষেত্রে কড়ই, হিজল, মেহগনি কাঠ বেশি ব্যবহার হয়। কেউ কেউ ছোট নৌকা তৈরির ক্ষেত্রে কাঁঠাল গাছের কাঠও ব্যবহার করে থাকে। নৌকা তৈরিতে আলকাতরা, তারকাঁটা, গজাল, পাতাম ইত্যাদি ব্যবহার করা হয়। ৪ থেকে ৫ জন শ্রমিক লাগে একটি ডিঙি নৌকা তৈরি করতে। ১২ হাতের নৌকা তৈরিতে ১২ থেকে ১৪ হাজার টাকা খরচ পড়ে। আর বড় নৌকা তৈরি করতে প্রায় দেড় লক্ষ টাকা মত খরচ পড়ে। নৌকা তৈরিতেই খরচ কম। আবার তৈরি করা নৌকা কিনতে গেলে দাম বেশি পড়ে। সে কারণে মাঝিরা নৌকা তৈরি করে নেন।
মোঃ শাওন আলী জানান, বর্ষা মৌসুমকে ঘিরে প্রতিবছর আবেদের ঘাটের নদীপারের মানুষ নৌকা তৈরি করেন। আবার পুরনো নৌকা মেরামত করে থাকেন। যাত্রী পারাপার হতে ভালো মানের নৌকা হলে আয় রোজগার ভালো হয় বলে মাঝিরা নিজ দায়িত্ব থেকে সেটা করে থাকেন।