নরসিংদী প্রতিনিধি:
নরসিংদীর মাধবদীতে পায়ের সামনে থুতু ফেলাকে কেন্দ্র করে কিশোরকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় ৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
এইদিকে, নরসিংদী সদরের গনেরগাঁও এলাকায় জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে এক নারীকে গাছে বেঁধে নির্যাতনের ঘটনায় একজনকে গ্রেপ্তার করেছে নরসিংদী মডেল থানার পুলিশ।
সোমবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) মো. আল আমিন।
এর আগে, রবিবার দিবাগত রাতে নরসিংদীর মাধবদী এবং নারায়নগঞ্জের আড়াইহাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে ৪জন ও তরুনী নির্যাতনের ঘটনায় নরসিংদী সদর থানার গনেরগাঁও এলাকায় অভিযান চালিয়ে ১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলো, মাধবদীর থানার দক্ষিণ বিরামপুর এলাকার আলী আহম্মেদ এর ছেলে আরাফাত (১৯), দড়িপাড়া এলাকার সেলিমের ছেলে অলিউল্লাহ (২১), মধ্য বিরামপুর এলাকার আব্দুর রহিমের ছেলে রাহাত (১৮) ও একেই এলাকার আব্দুস সালামের ছেলে অলি (১৮)। জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে তরুনী নির্যাতনের ঘটনায় গনেরগাঁও এলাকার মৃত. মালু মিয়ার ছেলে মো. মজিবুর রহমান (৬০)।
নরসিংদী অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) মো. আল আমিন জানায়, গত ১০নভেম্বর বিকেলে নারায়নগঞ্জ জেলার আড়াইহাজারের মোবারক হোসেন শাহীন নামে এক কিশোর নরসিংদীর মাধবদী এলাকায় অবস্থিত তার কর্মস্থল থেকে বাড়ি থেকে ফেরার পথে রাস্তার পাশে থুতু ফেলে। সেই থুতু ইয়াসিন নামের এক কিশোরের পায়ের সামনে গিয়ে পড়ে। এতে ইয়াসিন মোবারককে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। এরই ধারাবাহিতাকায় ১২ নভেম্বর সন্ধ্যায় নরসিংদীর মাধবদীর বিরামপুর এলাকায় আবারও তর্ক ও ঝগড়া হয়। এসময় ইয়াসিন ও তার ৪ সহযোগী মোবারক হোসেন শাহীন নামে ওই যুবককে লোহার রড, চাপাতি, চাইনিজ কুড়াল ও ছুরি দিয়ে আঘাত করে। পরে রক্তাক্ত জখম অবস্থায় স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে নরসিংদী সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। অবস্থার অবনতি হলে ভুক্তভোগীর পরিবারের লোকজন তাকে সদর হাসপাতাল থেকে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে যায়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত সাড়ে এগারোটার দিকে মারা যায় শাহীন। এই ঘটনায় নিহতের মা বাদী হয়ে রবিবার রাতে ১০ জনের নাম উল্লেখ্য করে মাধবদী থানায় মামলা করেন। মামলার পরপরই মাধবদী থানা পুলিশ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ও প্রযুক্তির সহায়তায় নরসিংদীর মাধবদী এবং নারায়নগঞ্জের আড়াইহাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে ঘটনার সাথে জড়িত এজাহারনামীয় আরাফাত, অলিউল্লাহ, রাহাত এবং মো. অলি নামে চারজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। বাকিদের গ্রেপ্তারের অভিযান অব্যাহত আছে। গ্রেপ্তারকৃত আসামীদের আদালতে পেরন করা হবে।
এদিকে, গাছের সাথে বেধে তরুনীকে নির্যাতন ও শ্লিলতাহানির ঘটনায় মো. মজিবুর রহমানকে গ্রেপ্তার করেছে নরসিংদী মডেল থানা পুলিশ। এর আগে গত ১০ নভেম্বর সকালে নরসিংদী সদরের শিলমান্দির গনেরগাঁও এলাকায় জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরকে কেন্দ্র করে আম গাছের সাথে বেধে ২/৩ জন মিলে এক তরুনীকে নির্যাতন ও শ্লিলতাহানি করা হয়। এসময় তার ডাক চিৎকার শুনে স্থানীয়রা এসে গাছ থেকে তার বাধন খুলে মুক্ত করেন। পরে তাকে স্থানীয় ভাবে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়িতে নিয়ে যান তার স্বজনরা। এই বিষয়টি স্থানীয় ভাবে এলাকায় চাঞ্চল্যকর পরিস্থিতি তৈরী হয়।
এই ঘটনায় ভিকটিম বাদী হয়ে গত রবিবার থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। এরপর থেকেই মডেল থানার পুলিশ আসামীদের গ্রেপ্তার করতে অভিযানে নামে। গত রবিবার রাতে নরসিংদীর সদরের শিলমান্দির গনেরগাঁও এলাকায় অভিযান চালিয়ে মো. মজিবুর রহমানকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। অপর আসামীদের সংক্ষিপ্ত সময়ের মধ্যেই গ্রেপ্তারের চেষ্টায় পুলিশী অভিযান অব্যহত রয়েছে। গ্রেপ্তারকৃত আসামীকে আদালতে পেরন করা হবে।