1. mostafa0192@gmail.com : admin :
  2. rokysaha83@gmail.com : বার্তা বিভাগ : বার্তা বিভাগ
শুক্রবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০১:৪২ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
রায়পুরায় ৩দিন ব্যাপী জাতীয় স্থানীয় সরকার দিবস মেলা শেষে পুরস্কার বিতরণ নরসিংদীতে বহুতল ভবন থেকে পড়ে নির্মাণ শ্রমিকের মৃত্যু রাজারহাটে সড়ক দূর্ঘটনায় প্রতিবন্ধী শিশুর মৃত্যু বেলাবতে নবনির্মিত অধ্যক্ষ আবদুল হামিদ একাডেমিক ভবন উদ্বোধন রায়পুরায় যাত্রীবাহি বাসের ধাক্কায় অটোরিকশার ৩ যাত্রী নিহত, আহত ৩ পুলিশ সুপার প্রলয় কুমার জোয়ারদারের ‍শুদ্ধাচার পুরস্কার প্রাপ্তিতে যশোর জেলা পুলিশের অভিনন্দন নরসিংদী জেলা প্রেস ক্লাব’র কমিটি গঠন; সভাপতি রিপন, সম্পাদক আইয়ুব খান জাতীয় শিক্ষা পদক- ২০২৩ রায়পুরার শ্রেষ্ঠ কাব স্কাউট শিক্ষক জায়েদা বেগম বেলাব উপজেলা কমিটির পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন সাভারে ছয়টি কারখানার অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন

নরসিংদীতে মেঘনার পাড়ে বাউল সাধকদের পদচারণায় মুখোর ঐতিহ্যবাহী বাউল মেলা

  • প্রকাশকাল : মঙ্গলবার, ৭ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩
  • ৩৫ সময়

মানবেন্দ্র রায়:

নরসিংদীতে মেঘনার তীরে ভারতসহ দেশ-বিদেশের শতাধিক বাউল সাধকদের পদচারণায় মুখোর হয়ে উঠেছে ঐতিহ্যবাহী বাউল মেলা।

আত্মশুদ্ধি আর আত্বমুক্তির লক্ষ্যে বাউলদের কীর্তন, গীতা পাঠসহ ধর্মী আচার-অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে সরব হয়ে উঠেছে মেঘনা পাড়ের এই বাউল আঁখড়াধাম। বাদ্যযন্ত্রের তালে তালে মানব ধর্ম ও সাম্যের জয়ধ্বনী করছেন বাউলরা । দেশ-বিদেশে ভক্তদের উপস্থিতিতে বাউল ঠাকুরের আঁখড়া পরিনত হয় ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকল ধর্মাবলম্বীদের মিলনমেলায়।
নরসিংদী শহরের কাউরিয়া পাড়ায় মেঘনা নদীর তীরে বাউল আঁখড়াধামে রবিবার (৫ ফেব্রুয়ারি) রাতে প্রথম বাতির মধ্য দিয়ে প্রায় ৭০০ বছরের ঐতিহ্যবাহী এ মেলা শুরু হয়। এরই মধ্যে দেশ বিদেশের শতাধিক বাউলরা সমবেত হয়েছেন। বুধবার প্রসাদ বিতরণ এবং পাঁচ দিনব্যাপী এই মেলা চলবে আগামী বৃহস্পতিবার (৯ ফেব্রুয়ারী) পর্যন্ত।

সোমবার সন্ধ্যায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মেলা উপলক্ষে মেঘনার পাড়ে শিশুদের হরেক রকমের খেলনা, খাবারসহ বিভিন্ন পণ্যের পসরা সাঝিয়ে বসেছেন ব্যবসায়ীরা।

বাউল ঠাকুরের আখড়াবাড়ি সূত্রে জানা গেছে , প্রতি বছরই মাঘী পূর্ণিমার দিনে শ্রী চৈতন্য দেবের জন্ম তিথী উপলক্ষে এই মহাযজ্ঞের আয়োজন করা হয়। প্রায় ৭শত বছরের ঐতিহ্যবাহী এই মেলাকে ঘিরে নরসিংদীর কাউরিয়া পাড়া এলাকার মেঘনা নদীর তীরে সমাগম ঘটে লক্ষাধিক নারী-পুরুষের। নদীতে চলে পূণ্যস্নান । পাশেই রয়েছে বাউল ঠাকুরের আঁখড়া। যেখানে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে বাউল শিল্পিরা এসে বসিয়েছে বাউল গানের আসর। মেলাকে ঘিরে মেঘনা নদীর পার ঘেষে জমে উঠেছে খেলনা, কুটির শিল্প, মৃৎশিল্প, কাঠ-বাঁশ ও মাটির তৈরী কুটির শিল্প সামগ্রীর হরেক রকম দোকানের পসরা।

এছাড়াও শিশুদের আকৃষ্ট করতে মেলায় বসেছে পুতুল নাচ, নাগর-দোলাসহ নানা বিনোদন মূলক রাইড্স। এদিকে বাউল ভক্তরা সারি বেঁধে মহাযজ্ঞানুষ্ঠানে ঘি-প্রদীপ, মোমবাতি ও আগরবাতি জ্বালিয়ে পুজো দিচ্ছে আর প্রার্থনা করছে পরিবার ও দেশের সকল মানুষের কল্যাণসহ যত ধরনের অশুভ শক্তি, অসাম্প্রদায়িকতা ও বর্তমান রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং সর্বোপূরি করোনা ভাইরাস থেকে নিস্কৃতি পেতে। প্রায় ৭০০ বছর ধরে চলে আসছে এই বাউল উৎসব। কথিত আছে, ৭০০ বছর আগে নরসিংদীতে এক বাউল ঠাকুর ছিলেন। তিনি নিজেকে শুধু বাউল বলেই পরিচয় দিতেন। এজন্য বাউল ঠাকুরের প্রকৃত নাম জানেন না এখানকার কেউই। সেই বাউল ঠাকুরের স্মরণে তার আখড়া ধামে অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে এই বাউল মেলা। তবে কে প্রথম এখানে বাউল মেলার আয়োজন করেন তার প্রকৃত তথ্য কারোই জানা নেই । সর্বশেষ ব্রিটিশ শাসনামল থেকে এখন পর্যন্ত মেলার আয়োজন করছেন স্বর্গীয় মনিন্দ্র চন্দ্র বাউলের পরিবার। বর্তমানে এই মেলায় আয়োজকদের মধ্যে রয়েছেন মনিন্দ্র চন্দ্র বাউলের পরিবারের সদস্য শীর্ষেন্দু বাউল পিন্টু, মলয় বাউল রিন্টু ও স্বপন বাউল।

বাউল ভক্ত ও দর্শনার্থী জানায়, এ আখড়ায় বাউল ঠাকুরের অন্তর্ধান হয়েছিল। বাউল আখড়ায় জগন্নাথ দেবতার মন্দির রয়েছে। মন্দিরে মহাবিষ্ণুর পূর্ণাঙ্গ প্রতিমা, জগন্নাথ দেবতার প্রতিমা, মা গঙ্গার (৩৩ কোটি দেবতার) গট, নাগ দেবতার বিগ্রহ ও শিবলিঙ্গ রয়েছে, যা বাউল ঠাকুর নিজে প্রতিস্থাপন করে গেছেন বলে কথিত রয়েছে। পাশে রয়েছে বাউল ঠাকুর ও মাতাজির সমাধি মন্দির। সবার মধ্যিখানে রয়েছে উপাসনার জন্য বিশাল আটচালা বৈঠক ঘর। বুধবার দেবতা ব্রহ্মার পূজা মহাযজ্ঞ অনুষ্ঠিত হয়। মহাযজ্ঞে জগতের কল্যাণের জন্য ব্রহ্মা, বিষ্ণু ও শিবের পূজা করা হয়। ঠাকুরের কাছে দেশ ও মানুষের কল্যাণে প্রার্থনা করা হয়। এদিকে বাউল মেলা উপলক্ষে দেশের নানা প্রান্ত থেকে ব্যবসায়ীরা বাঙালির চিরচেনা মুখরোচক খাবার ও বাহারি পণ্য নিয়ে হাজির হয়েছেন। এসব খাবারের মধ্যে রয়েছে আমিত্তি, জিলেপি, সন্দেশ, বারো মিঠাই, দই, মুড়ালি, গুড়ের তৈরি মুড়ি ও চিড়ার মোয়া, তিলের মোয়া, তিলের সন্দেশ, খাস্তা, কদমা, নারকেলের নাড়ু, তিলের নাড়ু, খাজা, গজা, নিমকি, মনাক্কা, গাজরের হালুয়া, পিঠাসহ রকমারি খাবার। এছাড়া শিশুদের খেলনা, ঘরের তৈজসপত্র, আসবাবপত্র, বিভিন্ন ধরনের তৈরি পোশাক, মাটি ও বাঁশের তৈরি জিনিসপত্রসহ নানা ধরনের পণ্যের স্টল নিয়ে বসেছেন ব্যবসায়ীরা।

মেলার আয়োজক ও নরসিংদী বাউল আঁখড়াধাময়ের সেবায়েত শ্রী শীর্ষেন্দু বাউল পিন্টু জানান, জীবের মঙ্গলার্থে বাউল ঠাকুরের আবির্ভাব হয়েছিল। কিভাবে সহজে মানুষ নিজেকে চিনতে পারবে সেই পথ তিনি দেখিয়ে গেছেন। আমরা তার পথ অনুসরণ করে ভেদাভেদ বিভেদ না করে ঈশ্বরের সৃষ্টিকে ভালোবেসে যাচ্ছি। জাতীধর্ম নির্বিশেষে প্রতিবছর সকলের মিলন ঘটানোর জন্যই মেলার আয়োজন করে গেছে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ ক্যাটাগরির আরো নিউজ...
© All rights reserved © 2013 alokitokhobor.com
Theme Customized By Khan IT Host