নরসিংদী প্রতিনিধি:
নরসিংদী জেলা ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক সাদেকুর রহমান সাদেক ও জেলা ছাত্র নেতা আশরাফুল হত্যার প্রধান আসামী ও সহযোগী সন্ত্রাসীদের দ্রুত বিচারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছে নিহতদের পরিবার।
বুধবার (২৬ জুলাই) সন্ধ্যায় নরসিংদী সদর প্রেসক্লাবে নিহত সাদেকুর রহমানের বড় ভাই আলতাফ হোসেন সংবাদ সম্মেলনে জেলা বিএনপির গ্রেপ্তারকৃত নেতা জাহেদুল কবির ভূইয়ার ফাঁসিসহ জড়িত অন্যান্য নেতাদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আশ্রয়ে নেওয়ার দাবি জানান।
সংবাদ সম্মেলনে নিহত সাদেকুর রহমানের বড় ভাই আলতাফ হোসেন লিখিত বক্তব্যে বলেন, গত ২৫ মে নরসিংদী শহরের অস্থায়ী কার্যালয় ও খায়রুল কবির খোকনের বাসার সামনে প্রকাশ্য দিবালোকে খোকনের সন্ত্রাসী বাহিনীদের গুলিতে সাদেকুর রহমান ও আশরাফুল গুলিবিদ্ধ হয়। সেদিন সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সাদেকুর রহমান সাদেক মারা যান এবং পরের দিন সকালে একই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান আশরাফুল ইসলাম। তাদের বিচারের দাবিতে মানববন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেও এখনো পযর্ন্ত বিচার কার্য যথাযথ ভাবে হচ্ছে না বলে সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেন।
এসময় তিনি আরো বলেন, নিহত দুই ছাত্রদল নেতা-কর্মীদের মামলার ঘটনায় এই পর্যন্ত ৯ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাদেরকে আদালতে পেরন করা হয়। সেসব আসামীরা আইনের ফাঁকফোকরে জামিনে মুক্তি হয়ে নিহতদের পরিবার ও আত্মীয় স্বজনদের নানা ভাবে হয়রানী এবং হুমকি দিচ্ছেন। যার জন্য নিহতদের পরিবার পরিজন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।
তিনি লিখিত বক্তব্যে আরোও বলেন, এই খায়রুল কবির খোকন ২০০৫ সালে ক্ষমতার বলে অবৈধ ভাবে ভোট কেন্দ্র দখল করে এমপি হয়ে খুনের রাজত্ব কায়েম করে। এমনকি তার বিরুদ্ধে যারা ন্যায় সংগত কথা বলে এবং তার অত্যাচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করায় পর্যায়ক্রমে তাদের দলের প্রতিপক্ষ ১৫ থেকে ২০ জনকে বিভিন্ন সময় হত্যা করেছে। কিন্তু হত্যাকারীদের বিচারের দাবিতে যারাই প্রতিবাদ করতো তারাই হত্যার স্বীকার হতো। তাই নরসিংদী সর্বস্তরের জনগণ এই পাপিষ্ঠ খুনী খায়রুল কবির খোকন ও তার সহযোগী কুখ্যাত সন্ত্রাসী, মাদক ও অবৈধ অস্ত্র ব্যবসায়ী সিদ্দিকুর রহমান নাহিদ, জাহিদুল কবির জাহিদ, লাল ভাই ও আলমিনদের দিয়ে অস্ত্র ও মাদক ব্যবসাসহ সকল প্রকার অবৈধ কার্যকলাপ পরিচালনা করা হয়। তাই আগামী নির্বাচনের আগে এই সন্ত্রাসীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা না হলে নির্বাচনকালীন সময়ে আরো ব্যাপক আকারে সন্ত্রাসী কার্যকলাপ করে অনেক মায়ের কোল শূন্য করে ফেলবে বলে দাবি করেন তিনি।
উল্লেখ, গত ২৬ জানুয়ারি সিদ্দিকুর রহমান নাহিদকে সভাপতি, মাইনুদ্দিন ভূঁইয়াকে জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি ও মেহেদী হাসানকে সাধারণ সম্পাদক করে ৫ সদস্যের (আংশিক) জেলা কমিটি অনুমোদন দেয় কেন্দ্রীয় ছাত্রদল। এরপর থেকে ওই কমিটি বাতিলের দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে আসছেন পদ না পাওয়া সংগঠনের একাংশের নেতাকর্মীরা। কমিটির ঘোষণার পর সেই রাতেই জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও কেন্দ্রীয় কমিটি আহবায়ক খায়রুল কবির খোকনের বাসভবন ও জেলা বিএনপির অস্থায়ী কার্যালয়ে ভাঙচুর ও আগুনের ঘটনা ঘটে। পরে ১২ ফেব্রুয়ারি দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে নতুন কমিটির সিনিয়র সহ সভাপতি মাইনউদ্দিন ভূঁইয়া ও সাবেক সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সাদেকুর রহমানকে সাময়িক বহিষ্কার এবং জেলা সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী ফাহিম রাজ অভিকে ছাত্রদল থেকে স্থায়ী বহিষ্কার করা হয়।