নাসিম আজাদ, পলাশ (নরসিংদী) প্রতিনিধিঃ
শৈত্য প্রবাহের কারণে নরসিংদীর পলাশে চলছে শীতের রাজত্ব,হাড়কাঁপানো শীত। সকাল থেকেই ঘন কুয়াশায় চারপাশ ঢাকা আর দুপুরে চলে সূর্যের লুকোচুরি। এতে জেঁকে বসেছে হাড়কাঁপানো শীত। ফুটপাত থেকে উপজেলার পলাশ-ঘোড়াশাল শিল্পাঞ্চলের বড় বড় মার্কেটসহ সর্বত্রই ছেঁয়ে গেছে শীতের পোষাক আর বাহারি কম্বলে। নিজে ও পরিবারের সদস্যদের উষ্ণ রাখতে দোকানে ভিড় করছেন ক্রেতারা।
শুক্রবার পলাশ উপজেলার সবচেয়ে বড় ফুটপাত ঘোড়াশাল বউ বাজার ঘুরে দেখা যায়, আর্থিকভাবে স্বচ্ছল ক্রেতারা যেমন আসছেন তেমনি স্বল্প আয়ের মানুষেরাও অল্পদামে শীতবস্ত্র কিনতে ফুটপাতের এসব ভ্রাম্যমাণ দোকানে ভিড় করছেন। তবে এখানে পুরুষ ক্রেতার চেয়ে মহিলা ক্রেতাই বেশি দেখা গেছে। এই ফুটপাতে শীতের চাদর, জ্যাকেট, সোয়েটার, কম্বল, মোটা কাপড়ের গেঞ্জি, হুডি, মাফলার, কমফোর্টার, হাতমোজা, কানটুপিসহ সব ধরনের শীতবস্ত্রের পসরা সাজিয়ে বসেছেন দোকানীরা। কোনো কোনো দোকানী আবার সাজিয়ে বসেছেন শুধুই শিশুদের শীতের কাপড়।
শীতবস্ত্র কিনতে আসা সবিকুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তি জানান, গত একসপ্তাহ ধরে হাড় কাঁপানো শীত অনুভূত হচ্ছে। তাই স্ত্রী সন্তান নিয়ে ফুটপাতের শীতবস্ত্রের দোকানে এসেছি কাপড় কিনতে। এখানে আমাদের মতো সাধারণ নিন্ম আয়ের মানুষের জন্য সব ধরনের শীতবস্ত্র পাওয়া যায়।
সোনিয়া নামে আরেক নারী ক্রেতা জানান, এখানে এসে অনেক দোকান ঘুরে দেখলাম আর কিছু শীতবস্ত্র কিনলাম। আমাদের মতো মধ্যবিত্তের মানুষের জন্য এ বাজার খুবই ভাল। হাতের নাগালেই সব কিছু সস্তা দামে পাওয়া যায়।
ফারজানা নামে আরও এক ক্রেতা জানান, কমদামে ছেলে মেয়েদের শীতবস্ত্র কেনার জন্যই এই ফুটপাতের দোকান গুলোতে এসেছি। তবে গত বছরের তুলনায় এবার একটু শীতবস্ত্রের দামটা বেশি মনে হচ্ছে।
দোকানের বিক্রেতাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, ফুটপাতে বিভিন্ন ধরনের শাল ও চাদরের দাম পরে ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা, সোয়োটার ২৫০ থেকে ৫৫০ টাকা, কাপড়ের জুতা ১৫০ থেকে ২৫০ টাকা, জ্যাকেট ৫০০ থেকে ৮৫০ টাকা, গরম কাপড়ের তৈরি প্যান্ট ২০০ টাকা থেকে ৩৮০ টাকা, পায়জামা ১২০ থেকে ৩৫০ টাকা, টুপিওয়ালা গেঞ্জি ১৩০ থেকে ২২০ টাকা, টুপি ১০০ থেকে ২২০ টাকা, মাফলার পাওয়া যায় ১০০ থেকে ২২০ টাকার মধ্যে, কম্বল ২৫০ থেকে ৩৫০ টাকা, বিদেশী কম্বল ২০০০ থেকে ৩৫০০ টাকা।
শীতবস্ত্র বিক্রেতারা বলছেন, করোনার কারণে গত দুই বছর ভালোভাবে ব্যবসা করা সম্ভব হয়নি। যার ফলে আমরা আর্থিকভাবে লোকসানের সম্মুখীন হয়েছি। কিন্তু এবছরও পরিবহনের ভাড়া বৃদ্ধির কারণে পণ্য আনা নেওয়াসহ অন্যান্য খরচ বেড়ে গেছে। তাই দামটা কিছুটা বেড়েছে। আর সব শ্রেণির ক্রেতাদের জন্য বিভিন্ন মানের শীতবস্ত্র আমরা সংগ্রহ করেছি। বাহারি আলোকসজ্জায় সজ্জিত দোকানগুলোতে অনেক ক্রেতা শীতবস্ত্র কিনতে পারেনি বলে ভিড় জমাচ্ছেন ফুটপাতের দোকানগুলোতে। আর তুলনামূলক দাম কম হওয়ায় ফুটপাত থেকেই পোষাক কিনছেন ক্রেতারা।
ঘোড়াশাল বাজারের বণিক সমিতির সাধারন সম্পাদক আবুল কাশেম জানান, শুক্র ও সোমবার এই দুই দিন এ বাজারের হাটবার থাকায় এখানে প্রায় ৪০০ ভাসমান দোকান ফুটপাতে বসে। ক্রেতা ও বিক্রেতাদের সুবিদার্থে আমরা এ দুই দিন বাজার কমিটির লোকজন সারাক্ষণ মনিটরিং করে থাকি।
তিনি আরও জানান, সব কিছুরই দাম বেড়েছে। মনে হচ্ছে সেই প্রভাব খুচরা বাজারেও পড়বে। তবুও আমরা আশাবাদী যে, এবছর ভালো ব্যবসা হবে।