প্রহলাদ মন্ডল সৈকত, কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি:
কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে মামলার রেকর্ড ও ওয়ান্টেভুক্ত আসামী না হলেও এক ব্যক্তিকে আটক করে উৎকোচ গ্রহন করেন ও মোটা অংকের উৎকোচ নেয়ার অভিযোগে ফুলবাড়ী থানার এস আই আইয়ুব আলীকে কুড়িগ্রাম পুলিশ লাইনে ক্লোজ করা হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ফু্লবাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) নাজমুস সাকিব সজীব।
থানা সুত্রে জানা গেছে, উপজেলার শিমুলবাড়ী ইউনিয়নের ভুরিয়ারকুটি গ্রামের মৃত গমির উদ্দিনের ছেলে মজিদুল হক (৫০) এর সাথে একই এলাকার বছির উদ্দিনের সাথে জমিজমা সংক্রান্ত জেরে ঝগড়া বিবাদ হয়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত সেপ্টেম্বর মাসের ১৯ তারিখে ফুলবাড়ী থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন বছির উদ্দিন। পরে ঘটনাটি স্থানীয় জনপ্রতিনিধির মাধ্যমে মিমাংসার সিধান্ত করা হয়। এটি জানার পরেও তদন্তকারী কর্মকর্তা এস আই আইয়ুব আলী বিভিন্ন সময় বিবাদীকে নানাভাবে হয়রানিসহ নগদ ৬ হাজার টাকা উৎকোচ গ্রহন করেন এবং আরও মোটা অংকের টাকা দাবী করেন।
এক পর্যায়ে পুলিশের এস আই আইয়ুব আলী মঙ্গলবার সকাল ৮ টায় মজিদুল হককে তার বাড়ী থেকে তুলে এনে থানার একটি কক্ষে আটক রাখেন এবং তাকে ছেড়ে দেওয়া হবে বলে তার পরিবার ও জনপ্রতিনিধি লায়লা বেগমের কাছে ১ লাখ হাজার টাকা দাবী করেন।
পরে বিষয়টি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম রব্বানী সরকারকে অবগত করা হলে তিনি বিষয়টি নিয়ে মঙ্গলবার রাত ৯ টার দিকে ফুলবাড়ী থানায় গিয়ে চ্যালেঞ্জ করেন।
এক পর্যায়ে অভিযুক্ত এসআই আইয়ুব আলীকে ফুলবাড়ী থানা অফিসার ইনচার্জ রুমে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি সদুত্তর দিতে না পারায় উপস্থিত সকলেই বিব্রত বোধ করেন।
শিমুলবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের সংরক্ষিত আসনে ইউপি সদস্য লায়লা বেগম জানান, তিনি আমার নিকট থেকে ইতিপূর্বে মজিদুলের বিষয়ে মামলা হবে না এই মর্মে ৬ হাজার টাকা কৌশলে উৎকোচ নেন। আবার মামলার মিমাংসার কথা বলে প্রকাশ্যেই ১ লাখ টাকার দাবি করেন থানায়।
শিমুলবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শরিফুল আলম মিয়া সোহেল জানান, অবৈধ ভাবে আমার ইউনিয়নের মজিদুল হককে এসআই আইয়ুব থানায় এনে আটক করে রাখেন। বিষয়টি পুলিশ সুপার মহাদয়কে জানার পর আটকের ১৪ ঘন্টা পরে আটক ব্যক্তি ছেড়ে দেওয়া হয় এবং রাতেই অভিযুক্ত এস আইকে পুলিশ লাইনে ক্লোজ করা হয়।
এ ব্যাপারে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও বীরমুক্তিযোদ্ধা গোলাম রব্বানী সরকার জানান, ক্ষমতার অপব্যবহার করে একজন গরীব অসহায় মানুষকে থানার একটি রুমে আটক করে রাখা হয়েছে এবং আমার সঙ্গে অসৌজন্য মূলক আচরণ করা হয়েছে। আমি বিষয়টি পুলিশ সুপারকে জানিয়েছি।
এ প্রসঙ্গে ফুলবাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) নাজমুস সাকিব সজীব ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, আটক ব্যক্তিকে ছেড়ে দেয়া হয় এবং উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে রাতেই এসআইকে পুলিশ লাইনে ক্লোজ করা হয়েছে।