শনিবার, ০৫ অক্টোবর ২০২৪, ০৮:৩১ পূর্বাহ্ন

ভৈরবে গৃহবধূকে ৩ তলা থেকে ফেলে দিয়ে হত্যার অভিযোগ স্বামীর বিরুদ্ধে

Reporter Name / ১০১ Time View
Update : মঙ্গলবার, ২২ নভেম্বর, ২০২২

ইমন মাহমুদ লিটন, ভৈরব (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি:

কিশোরগঞ্জের ভৈরবে তানজিনা ইসলাম (২৭) এক গৃহবধূকে নিজ বাড়ির ৩ তলা বাসা থেকে ফেলে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে স্বামী মাসুদুর রহমান এর বিরুদ্ধে।

মঙ্গলবার (২২ নভেম্বর) বিকাল ৩টার দিকে ভৈরব বাজারের বাতাসাপট্টি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

গৃহবধূ তানজিনার পরিবারের দাবী তাকে হত্যা করা হয়েছে কিন্তু স্বামীর পরিবারের দাবী আত্মহত্যা। তানজিনা ইসলাম পৌর শহরের চন্ডিবের এলাকার মৃত মাজহারুল ইসলামের মেয়ে ও অভিযুক্ত স্বামী মাসুদুর রহমান পৌর শহরের বাতাসাপট্টি এলাকার আবুল খায়ের’র ছেলে।

পরিবার সূত্রে জানা যায়, ২০১২ সালে দুপক্ষের সম্মতিতে পারিবারিকভাবে দু’জনের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে তানজিনাকে নানানভাবে অত্যাচার করছে স্বামী মাসুদুর রহমানসহ তার পরিবার। দীর্ঘ ১০ বছরের সংসারে ৫ বছরের ছেলে তাহমিদ ও ২ বছরের মেয়ে তাসলিম নামে দুটি সন্তান রয়েছে। মঙ্গলবার দুপুর ১টায় পরিবারের কাছে এলে অসুস্থ্য তানজিনাকে ডাক্তার দেখিয়ে দেয় বলে জানায় পরিবার। শ্বশুর বাড়ি ফিরে যাওয়ার পর দুপুর আড়াইটার দিকে পরিবার জানতে পারে তানজিনা ৩ তলা বারান্দা থেকে পড়ে গিয়েছে। পরে খবর পেয়ে আনোয়ারা জেনারেল হাসপতালে গিয়ে মৃত দেখতে পায়। তারপর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসি।

এ বিষয়ে কান্নায় জর্জড়িত তানজিনার মা শাহনোয়ারা জানান, ১০ বছর আগে মেয়েকে বিয়ে দিয়েছি। নানান অত্যাচার ও অভিযোগের পরও অনেক কষ্টে মেয়ে আমার সংসার করে যাচ্ছে। আমার ছেলেরা জোর করে আমার মেয়েকে এ কষ্টের সংসার করতে বাধ্য করেছে। আমি আমার ছেলেদেরকে বলেছি আমার মেয়েকে তারা মেরে ফেলবে। আজ তাই সত্যি হলো।

তানজিনার ভাই জামিল মিয়া জানান, দুপুর ১টার দিকে আমার বোনকে চিকিৎসা করাতে হাসপাতালে নিয়েছিলাম। কিন্তু তার স্বামী মাসুদুর রহমানকে বলে না আসায় সে ফোন দিয়ে হুমকি দিচ্ছে বাড়িতে গেলে তাকে মেরে ফেলবে। চিকিৎসা শেষে আমার বোনকে শ্বশুর বাড়িতে পাঠানোর পর ঘণ্টাখানেক পর জানতে পারি সে আত্মহত্যা করেছে। আমার বোন আত্মহত্যা করতে পারেনা হত্যা করা হয়েছে।

ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ইসমত তাহমিনা জানান, তানজিনাকে হাসপাতালে আনার পর তাকে মৃত অবস্থায় পেয়েছি। তার মাথার মধ্যে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। নাক-মুখ দিয়ে রক্ষা বের হচ্ছে।

স্বামী মাসুদুর রহমান জানান, আমাকে না বলে বাবার বাড়িতে গিয়েছিল এ প্রশ্ন করায় আমার সাথে বাকবিতর্ক হয়। পরে সে রাগের মাথায় ৩ তলা বারান্দা থেকে লাফ দিয়ে নিচে পড়ে যায়। তখন আমি আমার বাবা ও ভাই তাকে হাসপাতালে নিয়ে আসি। এ সময় কর্তব্যরত চিকিৎসক আমার স্ত্রীকে মৃত ঘোষণা করে।

ভৈরব থানা অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ মাকছুদুল আলম বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আমি নিজেই গিয়েছি এবং প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তানজিনার স্বামী, শ্বশুর ও তার ভাইকে আমাদের হেফাজতে আনা হয়েছে। লাশের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য কিশোরগঞ্জ সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category

আমাদের ইউটিউব চ্যানেল