ময়মনসিংহ প্রতিনিধি:
ভোজ্যতেলের আমদানি নির্ভরতা কমিয়ে আনার লক্ষ্যে সরকার কৃষিক্ষেত্রে সরিষা আবাদে ব্যাপক জোর দিয়েছেন। সে লক্ষ্যকে সামনে রেখে ময়মনসিংহ অঞ্চলে গত বছরের তুলনায় এবার প্রায় দ্বিগুণ জমিতে সরিষা চাষ করছেন কৃষকরা।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলের সূত্রে জানাগেছে, গত বছর ময়মনসিংহ অঞ্চলে ৬১ হাজার ৪৫ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষ হলেও এবার সেই আবাদ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯৭ হাজার ১৮৬ হেক্টরে। আবাদকৃত জমির হার বৃদ্ধি পেয়েছে ৬২.৮১ শতাংশ। ময়মনসিংহ বিভাগের ১ লক্ষ ৫৬ হাজার কৃষককে এক বিঘা জমির জন্য জনপ্রতি ১ কেজি করে সরিষা বীজ এবং ১০ কেজি ডিএপি ও ১০ কেজি এমওপি সার প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে।
এরমধ্যে ময়মনসিংহ জেলায় ৪৭ হাজার ৪০০ জন, জামালপুরে ৫৪ হাজার ৬০০ জন, নেত্রকোনায় ২৫ হাজার ২০০ জন এবং শেরপুর জেলায় ২৮ হাজার ৮০০ জন কৃষকের মধ্যে এসব প্রণোদনা দেওয়া হয়। তারমধ্যে বারি ১৪, বিনা-৪, ১৫ ও ১৭ জাতের সরিষার বীজ রয়েছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, ময়মনসিংহ অঞ্চলের উপ-পরিচালক সালমা আক্তার বলেন, বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট ও ভোজ্যতেলের আমদানি নির্ভরতা কমিয়ে আনার লক্ষ্যে সরকার কৃষিক্ষেত্রে সরিষা আবাদে ব্যাপক জোর দিয়েছেন। সরকার আগামী তিন বছরের একটি পরিকল্পনা হাতে নিয়েছেন যাতে ৪০ শতাংশ তেল আমদানি নির্ভরতা কমানোর কথা বলা হয়েছে। সে লক্ষ্যে আমরা ছয় মাস ধরে কৃষকদের সঙ্গে আলোচনা করে তাদের সরিষা চাষে উদ্বুদ্ধ করি।
এছাড়া যে সমস্ত জায়গা অনাবাদি আছে সে সমস্ত জমিতে সরিষা করার জন্য উদ্বুদ্ধ করেছি।
তিনি আরো বলেন, মানুষ এখন সয়াবিন তেল ছেড়ে সরিষা তেলের দিকে ঝুঁকছে। এ কারণে সরিষা তেলের চাহিদাও বেড়েছে।
ময়মনসিংহের বিভিন্ন এলাকার কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানাগেছে,আমন ধান কাটার পর প্রতি বিঘা জমিতে এক থেকে দুই কেজি সরিষা ছিটিয়ে দিতে হয়। ওই জমিতেই বেড়ে উঠতে থাকে সরিষা গাছ। বাড়তি পরিশ্রম ছাড়াই কৃষক ৬০ থেকে ৭০ দিনে এ সরিষা সংগ্রহ করতে পারেন। ভালো বীজ হলে এক বিঘা জমিতে ১০ থেকে ১৫ মণ সরিষা হয়ে থাকে। সরিষা সংগ্রহ শেষে ঐ জমিতেই কৃষকরা বোরো ধান চাষ করে থাকেন। ফলে কৃষকরা জমিতে দুই ফসলি থেকে তিন ফসলি কৃষিকাজ করছে ও লাভবান হচ্ছে। এবার স্থানীয় জাত ছাড়াও বিনা ও বারী জাতের সরিষার আবাদ হয়েছে বলে জানায় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের আঞ্চলিক কার্যালয়।