রাজনীতির ময়দানে ব্যস্ত। শপথ নিয়েছেন নবনির্বাচিত সংসদ সদস্যরা। সেই কাতারে দাঁড়িয়ে শপথ নিয়েছেন দেশের তারকা ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান। জীবনে প্রথম দেখলেন অভিজ্ঞতা। প্রায় ৩০০ আসনের শপথ। এত ভিড়ের মধ্যে সাকিব আলাদা একটি মুখ। একবার তাকালে চোখের পলক পড়বে না কৌতূহলী মানুষটির। বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ, কয়েকবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন, তিনিও কাল সাকিবকে দেখে হাত বাড়িয়েছেন।
সৌজন্য বিনিময় করেছেন। অনেকের মধ্যে সাকিবই বোধ হয় অনেকটা বেশি অভিনন্দন পেয়েছেন অন্য এমপিদের কাছ থেকে। প্রথমবার সংসদ সদস্য হয়েছেন। স্বাভাবিকভাবে মানুষের প্রতি দায়িত্ব বেড়েছে। বিশেষ করে মাগুরার মানুষের প্রতি। সাকিব বলেন, ‘তারা আমাকে যেভাবে সাপোর্ট দিয়েছেন, এখন তাদের সেই প্রতিদান দেওয়ার সময়। সর্বোচ্চ করার জন্য আমি চেষ্টা করব। এখন আমার প্রতিদান দেওয়ার সময়।’ সাকিব চাইলে অনেক কিছুই করতে পারেন। সাধারণ মানুষের সঙ্গে যেভাবে মিশেছেন, তা অবাক করেছে। এলাকার মানুষও সাকিবের দিকে তাকিয়ে আছে।
নিজে অলরাউন্ডার, খেলার মাঠে এক নম্বর। রাজনীতির মাঠে এক নম্বর হবেন কি না, সেই প্রশ্নে সাকিব আল হাসান বলেন, ‘রাজনীতির মাঠে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এক নম্বর। তার জায়গা কেউ নিতে পারবে না। তার থেকে যদি শিক্ষা নিয়ে কাজ করতে পারি, সেটাই আমার জন্য যথেষ্ট।’
রাজনীতির নতুন জীবনটাকে টি-টোয়েন্টি কিংবা ওয়ানডে ম্যাচের সঙ্গে নয়, টেস্ট ম্যাচের সঙ্গে তুলনা করেছেন সাকিব। টেস্ট ম্যাচ লম্বা সময়ের খেলা। আর সংসদ সদস্য হয়েছেন লম্বা সময়ের জন্য, পাঁচ বছর এই দায়িত্ব পালন করতে হবে। সাকিব বললেন, ‘টেস্ট ম্যাচের মতো খেলতে হবে। দীর্ঘমেয়াদি সময় নিয়ে কাজ করার সুযোগ যদি পাই, সুযোগ হয় ভালোভাবে। ঐ যে বললাম দীর্ঘ সময়ের ব্যাপার, আমি টেস্ট ম্যাচের মতোই খেলব।’
একই ছাদের নিচে শপথ নিয়েছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা। দ্বিতীয়বার নড়াইল-২ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। জানা যায়, মাশরাফির সঙ্গে সাকিবের দেখা হয়েছে, কথা হয়েছে। শপথ নিয়ে তারা ভিন্ন ভিন্ন সময়ে বেরিয়ে গেছেন। সংবাদ মাধ্যম মাশরাফিকে খুঁজে পায়নি। শপথ শেষে চায়ের টেবিলে মাশরাফি সেলফি তুলেছেন বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের সঙ্গে। সেখানেও দুই প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে সাধারণভাবেই বসে ছিলেন মাশরাফি। সাধারণ চলাফেরা তার। তাই সংবাদ মাধ্যমকেও খোঁজেন না। শপথ শেষে নিজের কাজে চলে গিয়েছেন তিনি। নির্বাচিত হওয়ার পর মাশারাফি তার এলাকায় ছিলেন, এলাকার মানুষের সঙ্গে মিশেছেন। আর সাকিব তখনই ঢাকায় চলে এসেছেন, অনুশীলনে গেছেন।
সাকিব স্বপ্নবাজ। টার্গেট করেন, সেটা আদায় করেন, অর্জন করেন। এমপি হতে চেয়েছিলেন, এমপি হয়ে দেখিয়েছেন। সংসদে ঢোকার পথ মাড়িয়ে আরো বেশি কিছু পাওয়ার আশায় ছিলেন। শপথ নিয়ে বেরিয়ে আসার সময় নানা প্রযুক্তির মাধ্যমে হয় সাকিবের। সেখানেই তিনি খোলাসা করে জানিয়েছিলেন, সরকার যদি তাকে বড় কোনো দায়িত্ব দেয়, তাহলে সেটি নিতে রাজিও আছেন। অপেক্ষায় ছিলেন, সন্ধ্যায় মন্ত্রিপরিষদ কার্যালয় থেকে কোনো ফোন আসে কি না। তার আগে শপথের পর জানিয়েছিলেন, তিনি প্রস্তুত আছেন। বলেছিলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী যেকোনো দায়িত্ব যদি দেয়, সেটা আমি গ্রহণ করতে প্রস্তুত আছি এবং আমি চেষ্টা করব তার যে কোনো ডিসিশনকে আমার সর্বোচ্চটা দিয়ে সাপোর্ট করার এবং আমার জায়গা থেকে যা যা করার আমি করব।’ গুঞ্জন আছে, সরকারের শীর্ষ পর্যায়ে দেখাও করেছেন তিনি। মন দিয়ে তার নির্বাচনী এলাকায় কাজ করার নির্দেশনা পেয়েছেন। ভবিষ্যতের জন্য তৈরি থাকবেন সাকিব।