মো. মোস্তফা খান, নিজস্ব প্রতিবেদক:
নরসিংদীর রায়পুরায় এক ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে দলের প্রভাব বিস্তার করে কৃষকের বালু বিক্রির কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে।
উপজেলার মরজাল ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমানের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ উঠে।
মরজাল ইউনিয়নের ধুকুন্দি চরে পার্শ্ববর্তী নদী থেকে ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে উত্তোলনকৃত বালু কৃষকের জমিতে রাখা হয়। সেই বালুতে চোখ পড়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আতাউর রহমানের। প্রায় ১০ একর জমির উপর রাখা কয়েক লাখ ফুট বালু স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও তার সহযোগী সারোয়ার হোসেন শাহিনের যোগসাজশে প্রায় ১কোটি ৬৫ লাখ টাকায় ফেয়ার ইলেকট্রনিকস নামে এক প্রতিষ্ঠানের কাছে বিক্রি করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
ভুক্তভোগী সাইদ, হারিছুল হক, সাইফুল ইসলাম সহ একাধিক জমির মালিক বলেন, সেনাবাহিনী আমাদের জমির পাশে আড়িয়াল খা নদী খননের সময় অতিরিক্ত বালু আমাদের জমিতে ফেলেন। ২৭/২৮ জনের প্রায় ২০ কানি বা ১০ একর জমির উপর এ বালু ফেলা হয়। কিছুদিন পূর্বে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও শাহিন এসে বলেন রাস্তা নির্মাণে বালুর প্রয়োজন। রাস্তা নির্মাণের কথা বলে আমাদের কাছ থেকে স্বাক্ষর নেন। পরে আমরা খোঁজ নিয়ে জানতে পারি যে, চেয়ারম্যান ও শাহিন ফেয়ার ইলেকট্রনিকস নামে একটি প্রাইভেট কোম্পানির কাছে ১ কোটি ৬৫ লাখ টাকায় বালু বিক্রি করেন। পরে বিষয়টি জানাজানি হলে চেয়ারম্যান ও শাহিন লোকলজ্জার ভয়ে ৭/৮ জন জমির মালিকেকে নামমাত্র কিছু টাকা পরিশোধ করেন। বাকি জমির মালিকরা তার কাছে বালু বিক্রির টাকা চাইতে গেলে তিনি দলের প্রভাব খাটিয়ে ভয়ভীতি দেখান। এব্যাপারে আমরা উপজেলা চেয়ারম্যান সহ স্থানীয় লোকজনকে মৌখিকভাবে জানালে সে আরও বেশি আমাদের উপর ক্ষিপ্ত হয়। আমরা আমাদের বালু বিক্রির টাকা ফেরত চাই।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত সারোয়ার হোসেন শাহিনের মুঠোফোনে কথা হলে তিনি জানান, আমি বালু বিক্রির সাথে জড়িত না। আমি একজন কৃষক। আমার জমির বালু বিক্রির টাকা আমি পেয়েছি। যারা টাকা পাইনি তারা চেয়ারম্যানের কাছে গেলেই হবে।
অভিযুক্ত স্থানীয় মরজাল ইউপি চেয়ারম্যান আতাউর রহমানের মুঠোফোনে কথা হয়। তিনি বলেন, পৌরসভা আওয়ামীলীগের সভাপতি মাহবুব আলম শাহীন ভাইয়ের মাধ্যমে কৃষকদের পাওনা বুঝিয়ে দিয়েছি।
এ ব্যাপারে রায়পুরা পৌরসভা আওয়ামীলীগের সভাপতি মাহবুব আলম শাহীন বলেন, আমার কাছে বেশ কয়েকজন কৃষক অভিযোগ করলে সপ্তাহখানেক আগে সবাইকে নিয়ে বসে ১২জন কৃষকের পাওনার বিপরীতে ২০ লাখ টাকার একটি চেক দেওয়া হয়। যদি চেয়ারম্যানের একাউন্টে টাকা থেকে থাকে তাহলে তারা টাকা পেয়ে যাবে। বাকী কৃষকদের টাকা পরিশোধ করছে কিনা তা আমার জানা নেই।