রায়পুরা (নরসিংদী) প্রতিনিধি:
নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নার্সদের অবহেলায় এক নারীর গর্ভে সন্তান মারা গেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
এ ঘটনায় বুধবার (২৮ ফেব্রয়ারি) ভোরে হাসপাতলের রুম ঘেরাও করে স্ট্রেচার ভাঙচুর করেন প্রসূতির স্বজনরা।
জানা গেছে, রায়পুরা পৌর শহরের তুলাতুলী এলাকার রহমত উল্লাহর স্ত্রী সাবিকুন্নাহার (২০) প্রসব ব্যথা নিয়ে মঙ্গলবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে ৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের মা ও শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি করানো হয়।
ভুক্তভোগী সাবিকুন্নাহার জানান, ভর্তির পর তাঁর প্রসব ব্যথা বাড়ানোর জন্য ইনজেকশন দেওয়া হয়। পরে চিকিৎসকদের পক্ষ থেকে জানানো হয় ভোরে নরমাল ডেলিভারি হবে। ভোরে অপারেশন থিয়েটার রুমে নেওয়ার সময় গর্ভে শিশু স্বাভাবিক ভাবে নড়াচড়া করছিল বলে জানান তিনি। সেখানে আফরোজা ও হাবিবা নামে দুজন নার্স ও একজন আয়া ছিলেন। ডেলিভারির সময় এক নার্স তার পেটে জোরে জোরে চাপ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ সময় গর্ভের শিশুর মৃত্যুর হতে পারে জানিয়ে ওই নার্সকে চাপ দিতে নিষেধ করেন সাবিকুন্নাহার। এতে ক্ষুব্দ হয়ে ওই নার্স তাকে ধমকি ও মারধর করেন। এক পর্যায়ে গর্ভে শিশুর নড়াচড়া বন্ধ হয়ে যায়। পরে এপিসিওটমি করানোর পর মৃত শিশু প্রসব হয়। অতিরিক্ত চাপ প্রয়োগে গর্ভে শিশুটি মারা যায় গেছে বলে দাবি সাবিকুন্নাহারের। ওই সময় তার মা ও স্বজনদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করার অভিযোগ উঠেছে নার্স ও আয়ার বিরুদ্ধে।
প্রসূতির স্বজনদের অভিযোগ, ডেলিভারির পর রোগীকে স্ট্রেচার ছাড়াই পায়ে হাঁটিয়ে মা ও শিশু ওয়ার্ডে আনা হয়। এ সময় পায়ে হেঁটে আসার সময় প্রচুর রক্তক্ষণ হয় ওই প্রসূতির। বর্তমানে তিনি হাসপাতালে ভর্তি আছে।
সাবিনার ভাই মিজান মিয়া জানান, নরমাল ডেলিভারি সময় কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. জেসমিন হাসপাতালে থাকার সত্তেও সেখানে যাননি। নার্সরা নরমাল ডেলিভারি করেন। চিকিৎসক ও নার্সের অবহেলায় শিশুটি মারা যায়। এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ করে করবেন বলে জানান তিনি। এ ঘটনায় প্রসূতির স্বজনরা উত্তেজিত হয়ে হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটারে প্রবেশ করে একটি স্ট্রেচার ভাঙচুর করে বলে জানান রায়পুরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নার্স ইনচার্জ রেহেনা বেগম। তবে এ ঘটনায় নার্স আফরোজা ও হাবিবার কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এব্যাপারে ডা. জেসমিন মুঠোফোনে জানান, ওই নারীর নরমাল ডেলিভারি হয়। এতে মৃত বাচ্চা প্রসব করেন তিনি। এতে চিকিৎসক ও নার্সদের কোন অবেহলা নেই বলে জানান তিনি। ওটিতে রোগীকে মারধর করার ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এমন কোন ঘটনা ঘটেনি।
এব্যাপারে জানতে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা খান মোহাম্মদ নুরউদ্দিন জাহাঙ্গীরকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।