নরসিংদী প্রতিনিধি:
নরসিংদীর রায়পুরা স্বামীর সাথে রাগ করে ঘরে থাকা পোকা মারার ওষুধ খেয়ে গৃহবধূ হামিদা বেগম (২২) নামে এক গৃহবধূ আত্মহত্যা করেছে বলে খবর পাওয়া গেছে।
শনিবার (১৯ আগস্ট) বিকেলে উপজেলার হাইমারা ইউনিয়নের বাহেরচর গ্রামে এই আত্মহত্যার ঘটনা ঘটে। নিহত গৃহবধূ হামিদা বেগম উপজেলার হাইরমারা ইউনিয়নের বাহেরচর গ্রামের বিল্লাল হোসেনের স্ত্রী এবং ওই ইউনিয়নের বীরকান্দি গ্রামের মৃত হানিফ মিয়ার মেয়ে।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, প্রায় ৬ বছর পূর্বে বীরকান্দি গ্রামের হানিফ মিয়ার মেয়ে হামিদা বেগমের পারিবারিকভাবে বিয়ে হয় বাহেরচর গ্রামের মালয়েশিয়া প্রবাসী বিল্লাল হোসেনের সাথে। বিয়ের কয়েক মাস পর বিল্লাল হোসেন নববধূ হামিদাকে রেখে জীবন জীবিকার তাগিদে মালয়েশিয়া চলে যায়। এরই মধ্যে হামিদার গর্ভে আসে সন্তান। বিয়ের এক বছরের মাথায় তাদের দাম্পত্য জীবনে হামিদার কোল জুড়ে আসে এক কন্যা সন্তান। গত একমাস আগে মালয়েশিয়ার পাঠ চুকিয়ে সে দেশে ফিরে আসে। দেশে ফিরে বিল্লাল প্রায় দিন স্ত্রী হামিদা বেগমকে বাবার বাড়ি থেকে টাকা পয়সা এনে দেওয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করতো। স্বামীর কথামতো হামিদা টাকার জন্য ভাইদের দ্বারস্থ হতো। হামিদার ভাইয়েরা বোনের সুখ শান্তির কথা ভেবে তাদের সাধ্যমত টাকা পয়সা দিয়ে সহযোগিতা করতো। শনিবার দুপুর ২টার দিকে স্বামী বিল্লাল হোসেনের সাথে হামিদা বাইরে থেকে বাড়িতে ফিরেন। এর কিছুক্ষণ পর বাড়ির লোকজন তাকে বমি করতে দেখে জিজ্ঞেস করলে ঘরে থাকা পোকা মারার ওষুধ খেয়েছে বলে তাদেরকে জানায় সে। পরে স্বামী বিল্লালের হোসেনের বোন হনুফা বেগম তাকে নরসিংদী সদর হাসপাতাল নিয়ে আসে। নরসিংদী সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক হামিদার অবস্থা আশঙ্কাজনক দেখে তাকে দ্রুত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেয়।
এদিকে বোনের বিষপানের খবরে হামিদার দুই ভাই হাসপাতালে ছুটে আসে। হামিদাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য অ্যাম্বুলেন্সে তোলা হলে ততক্ষণে সে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত নিহত গৃহবধু হামিদা বেগমের মরদেহ নরসিংদী সদর হাসপাতাল মর্গের রাখা আছে।
রায়পুরা থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মীর মাহবুব ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসেছি। তবে মৃত্যুর কারণ এখনো জানা যায়নি। তবে তার মুখে কীটনাশকের গন্ধ পাওয়া গেছে।