শনিবার, ০৫ অক্টোবর ২০২৪, ১০:৩০ পূর্বাহ্ন

হারিয়ে যাওয়া কিশোরের সন্ধান মিললো মালয়েশিয়া বন্দরের খালি কন্টেইনারে

Reporter Name / ৮৭ Time View
Update : শনিবার, ২১ জানুয়ারী, ২০২৩

আরিফুর রহমান স্বপন, কুমিল্লা প্রতিনিধি:

দুই মাস আগে হারিয়ে যাওয়া কুমিল্লার মনোহরগঞ্জের মানসিক ভারসাম্যহীন রাতুলকে অবশেষে পাওয়া গেছে মালয়েশিয়ার একটি বন্দরে।

গত ১২ জানুয়ারি চট্টগ্রাম সমূদ্র বন্দর থেকে ছেড়ে যাওয়া ‘এমভি ইন্টেগ্রা’ জাহাজের একটি খালি কন্টেইনারের ভেতর থেকে ১৭ জানুয়ারি তাকে উদ্ধার করা হয়। ওই কিশোরকে উদ্ধারের পর বিষয়টি নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হলে তোলপাড় শুরু হয়। প্রথমে তাকে রোহিঙ্গা ধারণা করা হলেও অবশেষে মিলেছে ওই কিশোরের নাম-পরিচয়। সে কুমিল্লা জেলার মনোহরগঞ্জ উপজেলার ঝলম দক্ষিণ ইউনিয়নের সাতপুকুরিয়া গ্রামের ফারুক মিয়ার ছেলে। তার পুরো নাম রাতুল ইসলাম ফাহিম (১৫)। পরিবারের দাবি, রাতুল মানসিক ভারসাম্যহীন। গণমাধ্যমে ছবি দেখে ছেলেকে শনাক্ত করেছে রাতুলের বাবা ফারুক মিয়া। বর্তমানে রাতুল মালয়েশিয়ার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে। রাতুলকে ফিরে পেতে তার বাবা-মা ও স্বজনেরা সরকারের হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন।

রাতুলের পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, ফারুক মিয়ার ৩ ছেলে। রাতুল সবার বড়। দিনমজুরের কাজ করে দিন কাটাচ্ছে তার পরিবার। তবে কবে কখন রাতুল কন্টেইনারে করে মালয়েশিয়া গিয়েছে তা জানেন না তার পরিবার।
রাতুলের বাবা ফারুক মিয়া জানান, প্রায় ২ মাস আগে বাড়ি থেকে বের হয় রাতুল। এর পর থেকে তার খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিলো না। অসুস্থ সন্তানকে হারিয়ে শোকের ছায়া নেমে আসে পরিবারের সদস্যদের মাঝে। সন্তানকে খুঁজে পেতে তার বাবা-মা সব আত্মীয় স্বজনদের বাসায় খোঁজ খবর নেয়, কিন্তু কোথাও কোনো খোঁজ মেলেনি রাতুলের। ছেলে হারানোর বিষয়ে তিনি থানায় জিডি করেননি।

রাতুলের মা রোকেয়া বেগম জানান, আমি আমার সন্তানকে পাওয়ার আশা ছেড়ে দিয়েছিলাম। আপনারা আমার ছেলেকে এনে দেন। আমি সরকারের কাছে আকুল আবেদন করছি। সরকার যেন আমার ছেলেকে আমার বুকে ফিরিয়ে দেয়।

শনিবার সন্ধ্যায় মনোহরগঞ্জ থানার ওসি শফিকুল আলম জানান, রাতুলের বাবা ফারুক মিয়া প্রায় ১৫/১৬ বছর চট্টগ্রাম শহরে রাজমিস্ত্রির কাজ করতেন। ওই সময় রাতুল তার মা-বাবার সঙ্গে চট্টগ্রামে বসবাস করতো। গত ৫ বছর পূর্বে ফারুক মিয়া রাজমিস্ত্রির পেশা ছেড়ে চট্টগ্রাম থেকে স্ব-পরিবারে গ্রামের বাড়িতে চলে আসেন। এবং কৃষি কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন।

এদিকে রাতুল মাঝে মধ্যে তার বাবা-মাকে ছেড়ে বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয়ে হতো। কয়েকদিন পর আবার নিজেই বাড়ি ফিরে আসতো। আবারও নিখোঁজ হওয়ার পর বাড়ি ফিরে আসবে এমন আশায় তার বাবা ফারুক হোসেন থানায় কোন জিডি করেননি।

একটি সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রাম বন্দর থেকে গত ১২ জানুয়ারি ছেড়ে যাওয়া ‘এমভি ইন্টেগ্রা’ জাহাজের একটি খালি কন্টেইনারে আটকা পড়ে রাতুল। জাহাজটি মালয়েশিয়ার কেলাং বন্দরে যাওয়ার পর ১৬ জানুয়ারি কন্টেইনারের ভেতর থেকে শব্দ শুনতে পান নাবিকেরা। এরপরই কেলাং বন্দরকে অবহিত করা হয়। পরদিন ১৭ জানুয়ারি বাংলাদেশ সময় রাত ১০টায় জাহাজটি জেটিতে এনে কন্টেইনার খুলে রাতুলকে উদ্ধার করা হয়। ওই কিশোরকে উদ্ধারের পর মালয়েশিয়ার একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category

আমাদের ইউটিউব চ্যানেল