হারিকেন ওটিসের আঘাতে মেক্সিকোর উপকূলীয় শহর আকাপুলকো লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে। নির্বাচনের আগে বিরোধীরা এই পরিস্থিতির সুযোগ নেয়ার চেষ্টা করছে বলে সমালোচনা করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ওবরাডোর।
মেক্সিকো সরকার শনিবার জানিয়েছে হ্যারিকেন ওটিসের আঘাতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৩৯ এ পৌঁছেছে। নিহতদের মধ্যে ২৯ জন পুরুষ এবং বাকিরা নারী। ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তায় সশস্ত্র বাহিনীর আট হাজারের বেশি সদস্যকে মোতায়েন করা হয়েছে।
ক্যাটাগরি পাঁচ মাত্রার সামুদ্রিক ঝড়টি গত বুধবার ঘণ্টায় ২৬৬ কিলোমিটার বেগে আকাপুলকোতে আঘাত হানে। সেসময় বন্যার পাশাপাশি অনেক বাড়ির ছাদ উড়ে যায় এবং যানবাহন পানিতে ডুবে যায়। স্থানীয়রা তাদের প্রিয়জনদের খোঁজ নিতে পারছেন না যোগাযোগ ব্যবস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায়।
সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, উপকূলীয় শহরটির দুই লাখ ২০ হাজারের বেশি ঘরবাড়ি এবং ৮০ শতাংশ হোটেল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন আছেন পাঁচ লাখ ১৩ হাজারের বেশি মানুষ।
হ্যারিকেন ওটিসে ক্ষতির পরিমাণ প্রাথমিকভাবে ১৫০০ কোটি মার্কিন ডলার বলে ধারণা করা হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় ত্রাণ পাঠানো শুরু হয়েছে।
মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট আন্দ্রেস ম্যানুয়েল লোপেজ ওবরাডোর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স-এ পোস্ট করা ২৪ মিনিটের এক ভিডিওতে সামগ্রিক পরিস্থিতি তুলে ধরেন। তিনি সেখানে তার বিরোধীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে বলেছেন, হ্যারিকেনের কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতির সুযোগ নিতে চাচ্ছে তারা। দেশটিতে আগামী বছর প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
‘তারা শকুনের মতো ঘুরছে, মানুষের যন্ত্রণা নিয়ে তারা ভাবছে না, তারা আমাদের আঘাত করতে চায় কারণ সেখানে অনেক প্রাণহানি হয়েছে,’ বলেন তিনি। হ্যারিকেন পরিস্থিতি মোকাবিলায় অতীতের অন্য যেকোনো সরকারের চেয়ে তার সরকার বেশি কাজ করছে, এমন দাবি করেন তিনি।
গণমাধ্যম মৃতের সংখ্যা বাড়িয়ে বলছে বলেও দাবি করেন তিনি। নিরাপত্তামন্ত্রী রোজা আইসলা রদ্রিগেজ জানিয়েছেন, ঝড়ের পর থেকে ১০ জন নিখোঁজ রয়েছেন।
কেউ কেউ অবশ্য বলছেন যে ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত আকাপুলকোর মানুষের সহায়তায় পর্যাপ্ত উদ্যোগ নেয়নি সরকার। কারণ সেখানকার মানুষকে এখনো খাদ্য ও পানীয় জল পেতে সংগ্রাম করতে হচ্ছে।
৩১ বছর বয়সি শিক্ষক কার্লোস দিয়াস বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে বলেন, ‘কোনো সহায়তা আসেনি। আমরা একা পড়ে আছি, সরকারের কোনো চিহ্ন কোথাও নেই।’
মেক্সিকোর প্রশান্ত মহাসাগরীয় উপকূলে এখন অবধি আঘাত হানা ঝড়গুলোর মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী ছিল হ্যারিকেন ওটিস। এটি ধারনার চেয়েও বেশি গতিতে আঘাত হানে।
সূত্র: ইত্তেফাক